কোথাও কেউ নেই এবং দর্শকপ্রিয়তা
_বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রদর্শিত এই টিভি ধারাবাহিক এতোটাই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল যে, ধারাবাহিকটির প্রতিটা পর্ব, দর্শকরা প্রবল আগ্রহ নিয়ে উপভোগ করতেন। ধারাবাহিকের অগ্রগতির সাথে সাথে দর্শকরা বাকের ভাইকে পছন্দ করে ফেলেন এবং তার পক্ষে জনমত গড়ে উঠে। একপর্যায়ে যখন বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হবার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠে, উকিল হুমায়ূন ফরীদি শত চেষ্টাসত্ত্বেও খেই হারিয়ে ফেলছেন এই কেসে..তখন দর্শকরা প্রতিবাদমুখর হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে; চলতে থাকে মিছিল, দেয়াল লিখন, সমাবেশ।
ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে লোকজন মিছিল করে স্লোগান দিতে থাকে:
“ বাকের ভাইয়ের ফাঁসি কেন, কুত্তাওয়ালী জবাব চাই ”
কিংবা,
“ বাকের ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে"
_এসকল খবর, সমসাময়িক পত্র-পত্রিকাতে প্রকাশিত হয় বেশ গুরুত্বের সাথে। তখন স্বভাবতই মনে হয়েছিল, হয়তো লেখক, জনমতের ভিত্তিতে ধারাবাহিকের গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ তা না করে ধারাবাহিকটিকে তার যথাবিহীত পরিণতি দেন, এবং বাকের ভাইয়ের পক্ষে দর্শকদের তুমুল আবেগ এবং সমর্থন সত্ত্বেও ধারাবাহিকে বাকের ভাইয়ের ফাঁসি হয়।
ধারাবাহিকটির তুমুল জনপ্রিয়তার ছায়া পড়ে বাকের ভাই চরিত্রের অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের জীবনেও। তিনি এর পর থেকে বাকের ভাই হিসেবে সমাদৃত হোন। এমনকি তিনি যেবার সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হলেন, তখন তাকে বাকের ভাইয়ের নাম ধরেই নীলফামারীতে ভোট চাওয়া হয়েছিল।
এছাড়া ধারাবাহিকটির আবহ সংগীত, দর্শক মহলে বিশেষ জনপ্রিয়তা পায় এবং আলাদা করে ক্যাসেটে এর আবহ সংগীত বিক্রয় হয়।
দর্শক জনপ্রিয়তার কথা বিবেচনায় ধারাবাহিকটি বিটিভিতে পূণ:প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে নাটকটির ক্যাসেট খুঁজে পাওয়া না যাওয়ায় ২০১৩ সাল পর্যন্ত এটি প্রচার করা যায়নি। ২০১৩ সালে বিটিভির মহাপরিচালক ম. হামিদের উদ্যোগে হারিয়ে যাওয়া সেই ইউম্যাটিক ক্যাসেট খুঁজে বের করে তা ডিজিটাল প্রযুক্তিতে রূপান্তর করা হয়।
কোথাও কেউ নেই
মুল লেখা: উইকিপিডিয়া
অনুলিখন: নিজ
